নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
হিন্দু হইয়া মুসলিম পরিচয় দেয়! সম্প্রতি রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় এক শিক্ষককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। ঐ শিক্ষককে যৌন হয়রানীর মামলা দিয়ে তার সামাজিক মর্যাদা হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। প্রায় ১০ বছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষকতা করছেন। ৪ বছর ধরে পড়াচ্ছেন একটি কলেজেও। নিজে একাধিক বিষয়ের উপর করেছেন স্নাতকোত্তর। তিনি একজন সনাতন ধর্মালম্বি বাংলাদেশি নাগরিক। এলাকার সবাই তাকে সুমন স্যার নামেই চেনে।
গত ২১শে অক্টোবর হঠাৎ তাকে ফোনে ডেকে এনে খিলগাঁও থানার সামনে কতিপয় ছেলে মারধর করে এবং থানায় জোরপূর্বক সোপর্দ করে পুলিশি সহায়তায়। মারধরের কারণ ও থানায় নিয়ে যাওয়ায় তিনি তার নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানতে চেয়েও জানতে পারেননি। পরে জানা যায়, তার এক সাবেক অসম্পূর্ন নামের শিক্ষার্থী এবং মিথ্যা কলেজের পরিচয় দিয়ে তার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে যে, শিক্ষক নিজেকে মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। বাদী এতে রাজী না হলে বিবাদী শিক্ষক যৌন নিপীড়ন করে। কিন্তু পরবর্তীতে ভিডিও ফুটেজ এবং সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে দেখা যায় বিবাদী এজাহারে উল্লিখিত সময়ে উক্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। মিথ্যা মামলায় ১১ দিন কারাবাসের পর তিনি জামিনে মুক্ত হন।
বিবাদীর সাথে কথা বললে তিনি জানান যে, জামিনে বের হয়ে আসার পর থেকে বাদী পক্ষ বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে, বাসায় লোক পাঠাচ্ছে। বাঁচতে দেবেনা এবং আরো মামলা দিবে বলেও ভয় দেখায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম নিজেকে বাদীর লোক বলে দাবী করছে এবং বিবাদীর দেয়া তথ্য প্রমাণ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। থানায় জিডি করতে গেলে মারধরের বিষয়টি জিডিতে উল্লেখ করতে দেয়া হয়নি। মামলার এজাহার সম্পর্কে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী হারুন বলেন, এজাহারে বাদীর নাম অসম্পুর্ন এবং নামের সাথে স্বাক্ষরের মিল নেই যা মামলাটির গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করেছে।
বাদীর কয়েকজন সহপাঠীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিবাদী কখনোই নিজের ধর্মীয় পরিচয় গোপন করেননি কিন্ত বাদী নিজে বিবাদীকে পছন্দ করত যা জানতে পেরে বিবাদী সাথে সাথে বাদীকে পড়ানো ছেড়ে দেয়। পরে মেসেঞ্জারে বাদীর ইঙ্গিতপূর্ন কথা বুঝতে পেরে বিবাদী তার সকল শিক্ষার্থীকে তিনি সন্তানের মত দেখেন বলে জানায়। যেহেতু এজাহারে বলা হয়েছে হিন্দু হইয়া মুসলিম পরিচয় দেয় যা ধর্মীয় সহিংসতার জন্য উস্কানিমূলক।
এজাহারে উল্লিখিত ঘটনাস্থলে গেলে বাড়ীর মালিক জানান যে, তার বাড়িতে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি এবং বাদীকে তিনি কখনো দেখেননি। এমতাবস্থায় বিবাদী তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। তিনি আরো জানান প্রয়োজনে তিনি মানবাধিকার কমিশনে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ঐক্য পরিষদে এবং ডিসির কাছে সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আবেদন জানাবেন।